বাংলাদেশে সম্প্রচার হওয়া বিদেশি টেলিভিশন চ্যানেলে দেশি বিজ্ঞাপন প্রচারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার।

18 April, 2017

তিনবিঘা করিডোর বাংলাদেশের কাছে ইজারা দেয়া হলেও এর সার্বভৌমত্ব ছাড়েনি ভারত ।




তিনবিঘা করিডোর ।
১৯৭৪ খ্রীষ্টাব্দের ১৬ মে নয়াদিল্লীতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তির ১নং ধারার ১৪ অনুচ্ছেদে বলা হয় যে ভারত বাংলাদেশের ১২ নং দক্ষিন বেরুবাড়ী ইউনিয়নের দক্ষিনের অর্ধাংশ লাগোয়া ছিটমহলগুলো( প্রায় দশমিক ৬৪ বর্গমাইল) পাবে বিনিময়ে বাংলাদেশ পাবে দহগ্রাম আঙ্গরপোতা ছিটমহল
বাংলাদেশের পাটগ্রাম থানাধীন  পানবাড়ী মৌজার সাথে দহগ্রাম-আঙ্গরপোতার সংযোগের জন্যে ভারত বাংলাদেশকে ১৭৮ মিঃ দৈর্ঘ্য ৮৫ মিটার প্রস্থতিনবিঘাজমি বাংলাদেশকে চিরস্থায়ী ইজারা প্রদান করিবে
১৯৭৪ খ্রীষ্টাব্দে বাংলাদেশ সংবিধান সংশোধন করে ভারতকে বেরুবাড়ী ইউনিয়নের দক্ষিনাংশ লাগোয়া ছিট সমুহ হস্তান্তর করলেও  চুক্তি রক্ষায় ভারত পিছপা হয় দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগ ধরে বাংলাদেশ কতৃক কুটনৈতিক চাপের ফলে ভারত বাংলাদেশের নিকট তিনবিঘা করিডোর ইজারা দিতে সম্মত হয় ১৯৯২ খ্রীষ্টাব্দের ২৫ জুন তারিখে বাংলাদেশের বুড়িমারী (থানা/উপজেলা-পাটগ্রাম, জেলা-লালমনিরহাট) সীমান্তে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় , এই বৈঠকে বাংলাদেশ পক্ষে নেতৃত্ব দেন লালমনিরহাটের তৎকালীন জেলা প্রশাসক খলিলুর রহমান ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেন কুচবিহারের তৎকালীন জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট গোপাল কৃষ্ণ সিংহ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরের দিন ২৬ জুন, ১৯৯২ তারিখ থেকে তিনবিঘা করিডোরের মাধ্যমে  দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ছিটমহলের মানুষ বাংলাদেশের মুল ভূখন্ডে যাতায়তের সুযোগ পায়
তিনবিঘা করিডোরের চারপাশে চারটি উড্ডীয়মান ভারতীয় পতাকা প্রমান করাচ্ছে যে তিনবিঘা করিডোর বাংলাদেশকে ইজারা দেয়া হলেও এর সার্বভৌমত্ব ভারত সরকারের নিয়ন্ত্রনাধীন
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন ২০১৫ খ্রীষ্টাব্দের মে মাসে ভারত সরকার সংবিধান সংশোধন করে স্থল সীমান্ত চুক্তি অনুমোদন করে কিন্তু কার্যকরের সময়ে দুই দেশের অন্যান্য ছিটমহলগুলো বিনিময় হলেও দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা বিনিময় চুক্তির বাইরে থাকে

!!! ব্লগটি লেখার সময়ে যাঁরা তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি!!!




4 comments:

  1. ১৭৮ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৮৫ মিটার প্রস্থ মুল ভূখন্ডে ভারতের মূল সড়ক রয়েছে। যা দিয়ে সারাক্ষণ বাস ট্রাক সহ ভারী যানবাহন চলাচল করে আর তাদের বিকল্প কোন সাবওয়ে তৈরীর ভূখন্ড নেই। এটি মনে হয় অন্যতম একটি কারন। আর এই জটিলতা গুলো বৃটিশ দের ইচ্ছাকৃত সৃষ্টি। যেন এই উপমহাদেশে একটি বিশৃঙ্খল অবস্থা চলমান থাকে।

    ReplyDelete
  2. ১৯৭৪ খ্রীষ্টাব্দের মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি অনুযায়ী তিনবিঘা করিডোরটি বাংলাদেশের নিকট চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত দিবে বলে উল্লেখ ছিল । ধন্যবাদ।

    ReplyDelete
  3. ১৯৭৪ সালের ১৬ মে দিল্লিতে শেখ মুজিবুর রহমান এবং ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তবিষয়ক যে চুক্তি সম্পাদিত হয়, তার ১নং ধারার (Article 1) ১৪নং উপধারাটি ছিল বেরুবাড়ী সংক্রান্ত। উপধারাটি নিম্নরূপ:

    "India will retain the southern half of South Berubari Union No. 12 and the adjacent enclaves, measuring an area of 2.64 Square miles approximately, and in exchange Bangladesh will retain Dahagram and Angorpota enclaves. India will lease in perpetuity of Bangladesh an area of 178 metres 85 metres near `Tin Bigha' to connect Dahagram with Panbari Mouza (P.S. Patgram) of Bangladesh.



    (ভারত দক্ষিণ বেরুবাড়ী ইউনিয়ন নং ১২-এর দক্ষিণার্ধ এবং সংলগ্ন ছিটমহলসমূহ যার আয়তন প্রায় ২.৬৪ বর্গমাইল তার অধিকারে রাখবে এবং বিনিময়ে বাংলাদেশ দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতা ছিটমহল তার অধিকারে রাখবে। ভারত চিরস্থায়ী লিজের ভিত্তিতে বাংলাদেশকে তিনবিঘার কাছে ১৭৮ মিটার ৮৫ মিটার জায়গা প্রদান করবে যাতে দহগ্রাম বাংলাদেশের পানবাড়ী মৌজার [থানা পাটগ্রাম] সঙ্গে সংযুক্ত হয়।)

    ReplyDelete
  4. ২৬ ডিগ্রি ২০মিনিট উত্তর অক্ষাংশে এবং ৮৮ ডিগ্রি ৩৪ মিনিট পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত পঞ্চগড় "জেলা" হিসেবে নবগঠিত ও আয়তনে ক্ষুদ্র হলেও এর পারিপার্শ্বিক ভৌগলিক অবস্থান অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ১৯৪৭ সালে স্যার সিরিল রেডক্লিফ কর্তৃক নির্দেশিত এই জেলার সীমান্ত রেখা অত্যন্ত আঁকাবাঁকা ও ভঙ্গুর। পঞ্চগড় জেলার তিনদিকেই ভারতীয় সীমান্ত। এই সীমান্ত অঞ্চল ১৮০মাইল বা ২৮৮ কিলোমিটার। জেলার মোট আয়তন ৫৯৩.২৪ বর্গমাইল। এ জেলার উত্তরে ভারতের দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলা, উত্তরপূর্ব ও পূর্বে জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলা এবং বাংলাদেশের নীলফামারী জেলা, পশ্চিমে ভারতের পূর্ণিয়া ও উত্তর দিনাজপুর এবং দক্ষিণ ও দক্ষিণ পূর্বে ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুর জেলা অবস্থিত। রেডক্লিফ রোয়েদাদ অনুযায়ী ১৯৪৭ সালে অবিভক্ত দিনাজপুর জেলার ৩০টি থানার মধ্যে ০৯টি সম্পূর্ণ এবং ০১টি আংশিকভাবে বাংলাদেশের দিনাজপুর জেলার সঙ্গে যুক্ত করা হয়। অবশিষ্ট ২০টি থানার মধ্যে পোরসা, পত্নীতলা ও ধামইরহাট থানাকে রাজশাহী জেলার অন্তর্ভূক্ত করা হয়। একই সময় জলপাইগুড়ি জেলার দেবীগঞ্জ, বোদা, তেঁতুলিয়া ও পঞ্চগড় থানাকে কেটে যুক্ত করা হয় দিনাজপুর জেলার সঙ্গে। স্যার রেডক্লিফ ১৯৪৭ সালে দিনাজপুর জেলার অংশ হিসেবে পঞ্চগড় অঞ্চলের যে সীমানা নির্দেশ করেন তা হলো----


    (বিহার প্রদেশের সীমানা যেস্থানে দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলার সীমানাকে স্পর্শ করেছে, সেখান থেকে একটি রেখা দার্জিলিং জেলার "ফাঁসিদেওয়া" থানা এবং জলপাইগুড়ি জেলার তেঁতুলিয়া থানার মধ্য দিয়া টানা যেতে পারে। এরপর রেখাটি তেঁতুলিয়া ও রাজগঞ্জ থানার মধ্যদিয়ে এবং পঞ্চগড় ও রাজগঞ্জ থানা, অতঃপর পঞ্চগড় এবং জলপাইগুড়ি থানার মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়ে, দেবীগঞ্জ থানার উত্তর কোণকে স্পর্শ করে কোচবিহার রাজ্যের সীমানা পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা যেতে পারে। দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলা দুটি এই রেখার উত্তর প্রান্তে অবস্থান করতে এবং তা হবে ভারতীয় ভূ-খন্ডের অন্তর্ভূক্ত।) রেডক্লিফ মিশন কর্তৃক পঞ্চগড় থানার সীমানা নির্দেশ করতে গিয়ে জলপাইগুড়ি জেলার ১২নং বেরুবাড়ি ইউনিয়নকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয় জটিলতা। সে সময় সমস্ত ইউনিয়নকে তৎকালীন পাকিস্তানভূক্তির দাবী উঠেছিল। কিন্তু কার্যত তা বাস্তবায়িত হয়নি। এই অমীমাংসিত বিষয়টি দু'দুবার রাষ্ট্রীয় শীর্ষ পর্যায়ে চুক্তি দ্বারা নির্দেশিত হয়। প্রথমত ,"নেহেরু-নুন" চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ১৯৫৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে।দ্বিতীয়ত, "মুজিব-ইন্দিরা" চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ১৬ মে ১৯৭৪ সালে।


    নেহেরু-নুন চুক্তি- ১৯৫৮


    This will be so divided as to give half of the area of Pakistan the other half adjacent to India being retained by India. The division of Berubari-12 will be horizontal, starting from the north-east corner of Debigang thana. The dividsion should be made in such a manner that the Kooch-Bihar enclaves between Panchagarh thana of East Pakistan and Berubarie Union No-12 of Jolpaiguri thana of west Bengal will remain connected as at Present with Indian territory and will remain with India. The "Kooch- Bihar" enclaves lower down between Boda thana and Berubari Union-12 will be exchanged along with the general exchange of enclaves and will go to Pakistan.


    মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি-১৯৭৪


    India will retain the southern half of south Berubari Union-12 and the adjacent enclaves, measuring an area of 2.64 square miles approximately, and in exchange Bangladesh will retain the "Dahagram" and "Angorpota" enclaves. India will lease in Perpetity to Bangladesh an area of 178m. X 85m. near "Tin Bigha" to connect "Dahagram with "Panbari" mouza (PS. Patgram) of Bangladesh.
    "নেহেরু-নুন" চুক্তিতে বেরুবাড়ী ১২নং ইউনিয়ন পূ্র্ববৎ থাকার কথা উল্লেখ রয়েছ। পক্ষান্তরে, ১৯৭৪ সালের মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি অনুযায়ী বেরুবাঢ়ী ইউনিয়নের অর্ধাংশের পরিবর্তে বাংলাদেশকে "দহগ্রাম" ও "আঙ্গুরপোতা" ছিটমহল প্রদানের কথা বলা হয়েছে। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে পাক-ভারত বিভক্তির সময় বর্তমান পঞ্চগড় জেলার ৪টি থানা তৎকালীন জলপাইগুড়ি জেলা থেকে বিচ্ছিন্ন করে তৎকালীন দিনাজপুর জেলার সঙ্গে জুড়ে দেয়ার ফলে যথেষ্ট হেরফের হয়েছে রাষ্ট্রীয় সীমানার।

    ReplyDelete