বাংলাদেশে সম্প্রচার হওয়া বিদেশি টেলিভিশন চ্যানেলে দেশি বিজ্ঞাপন প্রচারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার।

23 May, 2018

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার। বৌদ্ধধর্ম সম্পৃক্ত সব চেয়ে বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল এটি।


বৌদ্ধবিহার বলতে প্রধানত বৌদ্ধ ধর্মের সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বুঝায়। ভিক্ষুদের বাসস্থান, ধর্মীয় আচারাদি সম্পন্ন ও ধ্যান করার স্থান এবং বৌদ্ধ শিক্ষার কেন্দ্র হিসাবে একে চিহ্নিত করা যায়।

পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার ( Paharpur Buddhist Vihara ) বা সোমপুর মহাবিহার বর্তমানে ধ্বংসপ্রাপ্ত একটি প্রাচীন বৌদ্ধবিহার। পাহাড়পুরকে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বৌদ্ধবিহার বলা হয়, আয়তনের দিক থেকে ইহা ভারতের নালন্দা মহাবিহারের সমকক্ষ বলে তথ্য-প্রমান সুত্রে জানা যায় । এটি তিনশত বছর ধরে বৌদ্ধদের প্রধান ধর্মচর্চা কেন্দ্র ছিল । উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকেই নয়, চীন, তিব্বত, ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার( সাবেক ব্রহ্মদেশ),মালয়েশিয়া প্রভৃতি দেশের বৌদ্ধরা এখানে ধর্মচর্চা ও জ্ঞান চর্চা করতে আসতেন । খ্রিষ্টীয় দশম শতকে এই মহাবিহারের আচার্য ছিলেন অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান। পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারটি বাংলাদেশের নওগা জেলার বদলগাছি উপজেলা সদর থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তর দিকে অবস্থিত। পালবংশের প্রতিষ্ঠাতা গোপালের পুত্র রাজা ধর্মপাল অষ্টম শতকের শেষের দিকে অথবা নবম শতকে এই বিহারটি নির্মান করেছিলেন। ১৮৭৯ খ্রিষ্টাব্দে স্যার কানিংহাম এই বিশাল কীর্তি আবিষ্কার করেন । ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে ইউনেস্কো এটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের মর্যাদা দেয় ।

দ্রষ্টব্যঃ পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহার ভ্রমন/২০১০খ্রি, আয়োজনে মোজাম্মেল হোসেন আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয়, হাতীবান্ধা, লালমনিরহাট।

20 May, 2018

দু'জন রাষ্ট্রপতির বাড়ী রংপুরে । তাঁদের আমলেও উন্নয়ন লাগেনি বেগম রোকেয়ার বাড়ীতে ।


নারী জাগরনের অগ্রদুত বেগম রোকেয়ার জন্মস্থান রংপুরের পায়রাবন্দে তাঁর ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ীটাকে রক্ষা করার জন্যে নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত এদেশের কোনো সরকারই কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করে নাই। ফলে দীর্ঘদিনের অবহেলা ও অযত্নের ফলে বেগম রোকেয়ার বাড়ীটির স্মৃতিচিহ্ন সমূহ এখন নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে । উল্লেখ্য রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার এই পায়রাবন্দে ১৮৮০ খ্রিষ্টাব্দে বেগম রোকেয়া জন্মগ্রহন করেন ।
বেগম রোকেয়ার আঁতুর ঘর ।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে রংপুরের দু’জন ব্যক্তি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতির পদ দখল করলেও তাঁদের আমলে উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া পায়রাবন্দে বেগম রোকেয়ার ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ীটাতে এসে পৌঁছেনি । পৃথক পৃথক সময়ে ক্ষমতায় থাকা উক্ত রাষ্ট্রপতি দু’জন শুধু রাষ্ট্রপ্রধানই ছিলেন না, তাঁরা সরকার প্রধানও ছিলেন । তাঁদের একজনের নাম বিচারপতি আবু সাদাত মুহাম্মদ সায়েম, অপরজনের নাম জেনারেল হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ । বিচারপতি আবু সাদাত মুহম্মদ সায়েম ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ৬ নভেম্বর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ নেন এবং দেশজুড়ে সামরিক ফরমান জারি করেন। ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৯ নভেম্বর তিনি প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের পদ থেকে এবং পরের বছর ২১ এপ্রিল তিনি রাষ্ট্রপতির পদ থেকে অব্যহতি নেন । অপরজন জেনারেল এরশাদ ১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে ক্ষমতা দখল করে টানা ৯ বছর দেশ শাসন করেছিলেন।
পৃথক পৃথক সময়ে রাষ্ট্রপতির দায়িত্বে থাকা উক্ত ব্যক্তিদ্বয়ের রংপুর শহরস্থ বাড়ী থেকে ১০/১৫ কিলোমিটার দূরত্বে বেগম রোকেয়ার বাড়ীটি অবস্থিত ।
তবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এলে তাঁর উদ্যোগে বেগম রোকেয়ার স্মৃতি রক্ষায় নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়। ২০০১ খ্রিষ্টাব্দে পায়রাবন্দে বেগম রোকেয়ার বাড়ীর ৩.১৫ একর জমিতে ১৪,৭১০ বর্গফুট বিশিষ্ট মুল ভবন, ২৫০ আসনের সুসজ্জিত মিলনায়তন, ১০০ আসনের সুসজ্জিত সেমিনার কক্ষ, ৫০জন পাঠকের উপযোগী করে একটি বিশাল গ্রন্থাগার তৈরী, বেগম রোকেয়ার একটি ভাস্কর্য তৈরী, প্রাচীর বেষ্টনী দিয়ে বেগম রোকেয়ার জন্মস্থানটিকে ঘিরে রাখা সহ অনেক অবকাঠামো নির্মান করা হয় ।



দ্রষ্টব্যঃ ভ্রমনের তারিখ  ১৯ মার্চ ২০১৮খ্রি । সৌজন্যে- মোজাম্মেল হোসেন আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয়, হাতীবান্ধা, লালমনিরহাট।

মোঃ শাহজাহান হোসেন লিপু

14 May, 2018

বাউরার ঐতিহ্যের স্মারক এই বাউরা সাব পোস্ট অফিস ।

লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা বাজারটি সানিয়াজান নদীর তীরে অবস্থিত হওয়ায় সুদুর অতীতে নদীপথে বিভিন্ন অঞ্চলের সাথে বাউরা বাজারের একটা বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে উঠে । ফলে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বড় বড় ব্যবসায়ী ও পাইকারদের আনাগোনায় মুখরিত থাকতো এই বাউরা বাজার । পাট ও তামাক ক্রয়-বিক্রয়ের স্থান হিসাবে এই বাজারটি প্রসিদ্ধি পেয়েছিল। বিশেষ করে দেশ বিভাগের পূর্বে অর্থাৎ ব্রিটিশ আমলে সীমান্তের ওপার থেকে মারোয়ারী ব্যবসায়ীদের আগমনের ফলে বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসাবে বাউরা বাজারের উত্তরোত্তর শ্রীবৃদ্ধি ঘটতে থাকে ।
বাউরার বাণিজ্যিক গুরুত্ব বিবেচনা করে তৎকালীন বৃটিশ আমলে এখানে ‘বাউরা সাব পোস্ট অফিস(BAURA SUB POST OFFICE ) নামে একটি ডাকঘর স্থাপন করা হয়। বৃটিশ আমলে পাটগ্রাম থানাটি ভারতের জলপাইগুড়ি জেলার আওতাধীন হওয়ায় বাউরা সাব পোস্ট অফিসটি জলপাইগুড়ি প্রধান ডাকঘরের অধীনে পরিচালিত হতে থাকে এবং পাটগ্রাম থানার কিয়দাংশ ও পার্শ্ববর্তী রংপুর জেলার ( বর্তমানে লালমনিরহাট) হাতীবান্ধা থানার পুরো অংশকে বাউরা সাব পোস্ট অফিসের আওতায় আনা হয় । দেশ-বিদেশের স্বজনদের সাথে যোগাযোগ ও মানিঅর্ডারের মাধ্যমে অর্থ আদান-প্রদান এবং ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংকে লেনদেনের জন্যে বাউরা সাব পোস্ট অফিসটিই ছিল এতদাঞ্চলের মানুষের প্রধান মাধ্যম ।১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তান সৃষ্টি হলে এই অফিসটি রংপুর প্রধান ডাকঘরের আওতায় এবং পরবর্তীতে লালমনিরহাট নতুন জেলায় উন্নীত হলে এই বাউরা সাব পোস্ট অফিসটি লালমনিরহাট প্রধান ডাকঘরের আওতায় চলে আসে ।
১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই ডাকঘরটি ছিল হাতীবান্ধা-পাটগ্রামের মানুষের জন্যে যোগাযোগ রাখার প্রধান মাধ্যম। অর্থ লেনদেন, গুরুত্বপূর্ণ চিঠি ও টেলিগ্রাম আদান-প্রদান করা হতো এই ডাকঘরটির মাধ্যমে। অফিস চলাকালীন সময়ে অফিসটির বারান্দা গ্রাহকদের উপস্থিতিতে মুখর থাকতো ।
বর্তমানে মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে মোবাইল ব্যাংকিং, ইমেইল, সামাজিক ওয়েবসাইট ইত্যাদি ইন্টারনেট ভিত্তিক যোগাযোগ ব্যবস্থা গ্রাম পর্যন্ত পৌঁছানোর ফলে মানুষ এখন ডাকঘরের উপরে খুব একটা নির্ভরশীল নয় । তাই গ্রামীন জনপদের অন্যান্য ডাকঘরের ন্যায় বাউরা সাব পোস্ট অফিসটিও দিনদিন ঝিমিয়ে পড়ছে
পুনশ্চঃ উপরের ছবিতে বাউরা সাব পোস্ট অফিসটির বর্তমান ভবনের বাম পার্শ্বে দাঁড়িয়ে থাকা বৃটিশ আমলের আংশিক হলুদ রঙের ভবনটি ছিল বাউরা সাব পোস্ট অফিসের মুল ভবন।
নীচের ছবিতে সঞ্চয় ব্যাংকিংয়ের একটি পাসবহি। একাউন্ট হোল্ডারের নাম আজগার আলী আহমেদ। তিনি আমার আপন জ্যাঠা। তিনি ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে এই একাউন্টটি বাউরা সাব পোস্ট অফিসে খুলেছিলেন।


শাহজাহান হোসেন (লিপু)


04 May, 2018

রংপুরীয়া ভাষায় ' রংপুর ' শব্দটির উচ্চারণ ও বানান কি হবে ?


রংপুরের আঞ্চলিক ভাষায় লেখা এই আমন্ত্রনপত্রটিতে দু'টো বানান নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছি ।
আমার ধারনা রংপুরীয়া ভাষায় 'রংপুর' বানানটি হবে 'অম্‌পুর বা অম্পুর' আর 'কথাবার্তা' বানানটি হবে 'কথাবাত্তা' । বানান দু'টো নিয়ে সবার মন্তব্য কামনা করছি ।


To read/view more comments in facebook, click here>‎বানানবন্ধুর শুদ্ধ চর্চা।